
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ট্রান্সিয়েন্ট অ্যারে রেডিও টেলিস্কোপ (টার্ট) স্থাপন করে নতুন অধ্যায় শুরু করল ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)। ১৮ নভেম্বর মহাকাশ থেকে আগত রেডিও তরঙ্গ সফলভাবে শনাক্তের মাধ্যমে টেলিস্কোপটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি, স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিকসের (কাসা) উদ্যোগে নির্মিত ‘স্টার্ট’ নামের এই টেলিস্কোপটি আইইউবির একাডেমিক ভবনের ছাদে স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আইইউবি কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ফিজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত টেলিস্কোপটির অ্যান্টেনা ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে নিউজিল্যান্ড থেকে। নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর জ্যেষ্ঠ প্রভাষক টিম মোল্টেনরের তত্ত্বাবধানে টেলিস্কোপটি অনলাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে টেলিস্কোপটির সংকেত শনাক্তকরণের সব তথ্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখা যাবে।
কাসার পরিচালক ও আইইউবির ফিজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খান মুহাম্মদ বিন আসাদ বলেন, “এই টেলিস্কোপ স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নির্মাণের এক নতুন সূচনা হলো। স্টার্ট টেলিস্কোপটি সম্পূর্ণ করতে ছয় মাসেরও বেশি সময় লেগেছে। সাধারণ টেলিস্কোপ যেখানে আলো প্রতিফলিত করে ছবি তৈরি করে, স্টার্ট সেখানে একাধিক জিপিএস অ্যান্টেনার সাহায্যে চোখে দেখা যায় না এমন রেডিও তরঙ্গ শনাক্ত করে। এর মূল লক্ষ্য পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ারে ইলেকট্রনের ঘনত্ব নির্ণয় করা এবং মহাকাশ থেকে বায়ুমণ্ডলে আসা ইলেকট্রনসহ বিভিন্ন ফার্মিয়ন কণা—যাদের আমরা কসমিক রশ্মি হিসেবে চিনি—সেগুলো শনাক্ত করা। স্টার্টের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করতে আমাদের প্রধান উপকরণ হবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী জিপিএস স্যাটেলাইটগুলো।”
টেলিস্কোপটির ব্যাস বা দুই প্রান্তের সবচেয়ে দূরবর্তী অ্যান্টেনার মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ১০ ফুট। টেলিস্কোপ পরিচালনা সম্পর্কে দেশের অন্য দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে কাসা একটি পাঁচ দিনের কর্মশালারও আয়োজন করে। ১৮ নভেম্বর কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইইউবির উপাচার্য ম. তামিম বলেন, “স্টার্ট টেলিস্কোপ বাংলাদেশের জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নির্মাণের নতুন যাত্রা শুরু করেছে। এটি গ্লোবাল বাংলা–আইইউবির জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কাসার অন্যতম লক্ষ্য ভবিষ্যতে দেশের নতুন প্রজন্মকে মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে দক্ষ করে গড়ে তোলা।”
মন্তব্য করুন