বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
একনেকে উঠছে সোমবার

মিরপুরে ২৩৬৪ ফ্ল্যাট পাচ্ছে জুলাই শহীদ ও আহত পরিবার জুলাই শহীদ ও আহত পরিবার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
মিরপুরে ২৩৬৪ ফ্ল্যাট পাচ্ছে জুলাই শহীদ ও আহত পরিবার জুলাই শহীদ ও আহত পরিবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৪-এ কর্মক্ষমতা হারানো আহত যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারগুলোর জন্য ঢাকার মিরপুরে নির্মিত হচ্ছে মোট দুই হাজার ৩৬৪টি আধুনিক ফ্ল্যাট। দুটি বড় প্রকল্পের মাধ্যমে মিরপুর ৯ ও ১৪ নম্বর সেকশনে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প দুটি অনুমোদনের জন্য আগামী সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হবে।

মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে আহত পরিবারগুলোর জন্য এক হাজার ৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৯ মেয়াদে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। আর মিরপুর সেকশন ১৪-তে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য ‘৩৬ জুলাই’ নামের পৃথক প্রকল্পে নির্মিত হবে আরো ৮০৪টি ফ্ল্যাট। এর ব্যয় ৭৬১ কোটি টাকা এবং মেয়াদ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৯।

প্রথম প্রকল্পটিতে বেজমেন্টসহ ১৫টি আবাসিক ভবনের প্রতিটিতে ১৪ তলা এবং প্রতিটি ফ্লোরে আটটি করে মোট এক হাজার ৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন এক হাজার ২৫০ বর্গফুট। নিচতলা ও বেজমেন্টে থাকবে পর্যাপ্ত কার পার্কিং সুবিধা। এ ছাড়া থাকবে আধুনিক লিফট, সাবস্টেশন, জেনারেটর, সোলার সিস্টেম, ফায়ার হাইড্রেন্ট, সিসি ক্যামেরা, ইন্টারকম এবং বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা। প্রকল্প এলাকার জমি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব হওয়ায় অধিগ্রহণজনিত জটিলতার ঝুঁকি নেই।

অন্যদিকে মিরপুর সেকশন ১৪-তে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য ‘৩৬ জুলাই’ নামের প্রকল্পে ৫.০৮ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১৮টি ভবন, এর মধ্যে ছয়টি ১৪ তলা এবং ১২টি ১০ তলা। মোট ৮০৪টি ফ্ল্যাটই হবে এক হাজার ৩৫৫ বর্গফুট আয়তনের। এই প্রকল্পেও থাকবে পর্যাপ্ত লিফট, সাবস্টেশন, জেনারেটর, সিসিটিভি, ফায়ার হাইড্রেন্ট, সোলার সিস্টেমসহ সব আধুনিক সুবিধা। সামাজিক সুরক্ষা ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ডিপিপির সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে।

পিইসি সভায় উভয় প্রকল্পই অনুমোদনযোগ্য বলে মত দেওয়া হয়েছে এবং কিছু সিদ্ধান্ত প্রতিপালনের শর্তে একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রকল্পে বরাদ্দ পেতে প্রকৃত শহীদ পরিবার বা আহত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় যাচাই সাপেক্ষে নিশ্চিত হতে হবে। পূর্বে সরকারি ফ্ল্যাট পেলে নতুন বরাদ্দ মিলবে না। বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাট বিক্রি, হস্তাস্তর বা ভাড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভুয়া তথ্য দিলে বরাদ্দ বাতিলের নিয়ম রয়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রকল্পটির ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের নির্দেশনা অনুসারে ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে।

সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দুটি প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় দুই হাজার ১০৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা পুরোপুরি সরকারের অনুদান থেকে প্রদান করা হবে। সরকার বলছে, প্রকল্পগুলো শুধু ঘর নয়, বরং নিরাপদ, মানসম্মত ও মর্যাদাপূর্ণ একটি নতুন জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা দেবে।

এর আগে গত জুলাইয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয় একনেক সভা থেকে। প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়ার বিষয়ে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ‘জুলাই শহীদদের’ স্মরণে মিরপুরে ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে। তবে খরচের যৌক্তিকতা ও নকশা যাচাই না হওয়ায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়নি।’

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু শহীদ পরিবারের জন্য সহায়তা বর্তমানে খণ্ড খণ্ডভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও ঘাটতি, কোথাও পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এসব একত্র করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন। কে প্রকৃত উত্তরাধিকারী, কাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা নির্ধারণেও সুস্পষ্ট নীতিমালা দরকার।’

তিনি আরো জানান, ঢাকা ছাড়াও শহীদ পরিবারের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ে একটি নতুন প্রস্তাব আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে মূল দায়িত্ব পালন করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • দিনের সেরা
  • সপ্তাহের সেরা
আবার ভূমিকম্প অনুভূত
আবার ভূমিকম্প অনুভূত
বাউলদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে : প্রেস সচিব
বাউলদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে : প্রেস সচিব
শেখ হাসিনার মামলায় লড়বেন না জেড আই পান্না
জানালেন ভিডিও বার্তায় / শেখ হাসিনার মামলায় লড়বেন না জেড আই পান্না